ভুতের বাড়ি bangla bhuter golpo

bangla bhuter golpo

bangla bhuter golpo
bangla bhuter golpo

ছোটবেলায় দাদি-নানীদের কাছে আমরা সকলেই ভূতের নানা গল্প শুনে বড় হয়েছি। সেই থেকে ভূত বা ভুতুড়ে বাড়ি সম্পর্কে শুনেছি হাজারো গল্প। আধুনিক পৃথিবী যেভাবে ভূত-প্রেতের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে চলে সেখানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন অবধি ছড়িয়ে থাকা শত শত ভুতুড়ে জায়গা কৌতুহল জাগায় বৈকি। তবে বাস্তবে হয়তো কখনো কখনো জনশ্রুতিতেই গড়ে ওঠে এমন অনেক ভূতুড়ে বাড়ি বা জায়গা। কোনো কোনোটিতে থাকে চমকপ্রদ রহস্য, যা এই জায়গাগুলোকে ঘিরে তৈরি করে ভূতুড়ে আবহ। আর এর কোনোটাই যখন শক্ত দলিল প্রমাণ দিয়ে বোঝা যায় না তখনই জমে ওঠে আসল মজা।

এ রকমই কিছু জায়গা কিন্তু বাংলাদেশের নানা প্রান্তেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যা নিয়ে গা ছমছমে গালগল্প চলে এই স্যাটেলাইট আর ইন্টারনেটের যুগেও। আজ জানাচ্ছি সেরকমই একটি ভূতুড়ে বাড়ির গল্প। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত এই বাড়িটি। সঙ্গত কারণে বাড়ির ঠিকানাটি একটু অজানাই থাক পাঠকদের কাছে। ওই বাড়ির সত্যতা জানার জন্য সেই বাড়ির ঠিকানায় হাজির হলাম ভরদুপুরে। বাড়িটি আগে থেকেই চিনতাম তাই খুঁজে পেতে খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়নি bangla bhuter golpo ।

ঝামেলাটা হলো বাড়ির ভূতুড়ে গল্প আদৌ সত্য কি-না সেটা জানতে গিয়ে। বাড়ির পাশের চায়ের দোকানের মামা থেকে শুরু করে বাড়ির দারোয়ানের প্রতিটি কথায় ছিল রহস্য। তাদের কথা শুনে, প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার কৌশলে আঁচ করতে পেরেছি ঘটনা সত্য।

বাড়ির ভাড়াটিয়ার আত্মহত্যা

এই বাড়িতে ভাড়া থাকা প্রায় সব ভাড়াটিয়াই বিভিন্ন অদ্ভুত বা ভূতুড়ে কাণ্ড-কারখানার সম্মুখীন হন। অনেক সময় গভীর রাতে (রাত ১-২টার দিকে) বাড়িটির ফ্ল্যাটের বারান্দায় রাখা দোলনায় কাউকে দুলতে দেখা যায়। ঘটনাটি দেখেছেন এমন লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

এছাড়াও বাড়ির রুমে অনেক সময় নাকি গভীর রাতে কারা হইচই করে। কিন্তু তত্ক্ষণাত্ রুমে গেলেও কাউকে দেখা যায় না। বাড়িটিকে ঘিরে লোক মনে কৌতুহলের কোনো শেষ নেই।। শোনা যায়, উক্ত বাড়িতে ভাড়া থাকতো যে ভাড়াটিয়া তার ছোট মেয়ে প্রায় ১১ বছর আগে গলায় ফাঁস দিয়ে নিজ ঘরে মারা যায়। মেয়েটি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। এই আত্মহত্যার পর থেকেই এমন অদ্ভুতুড়ে কার্যকলাপ শুরু হয়!

অমাবস্যায় কালো কুকুর bangla bhuter golpo

প্রতি আমাবস্যায় রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত একদল কুকুর দলবেঁধে বাসার সামনের রাস্তায় চক্কর দেয়। অনেকেই সেই কুকুরের দলকে দেখতে পেয়েছেন। এটা আর নতুন কি! কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো তারা শুধুমাত্র অমাবস্যার রাতেই উপস্থিত হয় এবং সারা মাসে তাদের আর দেখা যায় না। কয়েক যুবক মিলে একবার রাত করে তাদের দেখার জন্য প্রস্তুতি নেয়।

তাদের মাঝে ২ জন কুকুরের কামড়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। যুবকদের প্রায় সকলেই একটি রেডিও স্টেশনে স্বীকারোক্তি দেয় যে, সেই সব কুকুরগুলো কালচে বর্ণের ছিল। কারণ অন্ধকারে তাদের স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। তারা একটি ছন্দ মিলিয়ে এক লাইনে হাঁটছিল এবং তাদের প্রত্যেকের চোখ থেকেই এক প্রকার নীলচে আভা বের হচ্ছিল।

ঘরময় হাঁটে হলুদ কাপড়ে কেউ

মাঝরাতে কোনো এক রুমের সামনে দিয়ে নাকি রাত ১২টার পর একজন বউকে হেঁটে যেতে দেখা যেত। যার পরনে থাকে লালপাড় দেওয়া একটি হলুদ শাগি। সে কোথা থেকে আসে এবং কোথায় যায় তা আজ পর্যন্ত কোনো ভাড়াটিয়াই শনাক্ত করতে পারেনি। অনেক ভাড়াটিয়াই নাকি বউটিকে দেখেছে।

মেঝেতে জমে রক্তলাল পানি 

বেশ অবাক হয়েছি শুনে যে, ওই ফ্ল্যাটের ফ্লোরে পানি জমতো। তাও শুধু পানি হলে এক কথা ছিল, যে পানি জমতো সেগুলো ছিল রক্ত রঙের পানি। ফ্ল্যাটের মালিকপক্ষ অনেকবার মেঝে ঠিকঠাক করে দিলেও বন্ধ হতো না সেই পানি জমা। শুধু মেঝেতে পানি জমা সমস্যাই নয়, ছিল বিদ্যুত্ বিভ্রাটের সমস্যাও bangla bhuter golpo।

এতোক্ষণ যে বাড়ি নিয়ে এতো গল্প হলো সেই বাড়ির প্রতিটি ফ্ল্যাটে কিন্তু এমন ঘটনা ঘটে না, ঘটছে শুধুমাত্র একটি ফ্ল্যাটকে ঘিরে। সেই ফ্ল্যাটে এখন আর কোনো ভাড়াটিয়া থাকে না। মালিকপক্ষও এখন আর সেই ফ্ল্যাট ভাড়া দেন না। শেষে সেই বাড়ির দারোয়ানের একটি কথা দিয়ে শেষ করছি-‘ভূত মানতে গেলে দেখা যাবে আপনার সাথেও ভূত আছে। ’ কথা শুনে মনে মনে হেসেছিলাম, রাস্তায় যেতে যেতে যেমন ভেবেছি ঠিক লিখতে লিখতেও তেমনটাই ভাবছি সত্যি আমার সাথেও কি তাহলে ভূত আছে?

Leave a Comment